করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চাকরির বাজারের পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে পাল্টে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা না হওয়ার কারণে কর্মী ছাঁটাই করছে আবার অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাটাই না করলেও নতুন নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা অবস্থার মুখে পড়েছেন বেকার জনগোষ্ঠী। সদ্য পাশ করা কর্মহীন গ্র্যাজুয়েটদের সাথে সাথে, করোনার কারণে চাকরি হারিয়ে নতুন করে বেকার হয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশে প্রতি চারজন যুবকের মধ্যে একজন কর্মহীন বা বেকার রয়েছে (২৭.৩৯%)। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই বেকারত্ব বাড়ছে।
টানা বেশ কয়েক মাস ধরে বেকার রয়েছেন লালবাগ এলাকার বাসিন্দা শাকিলা জেরিন। তিনি জানান, কয়েক মাস আগেও বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর পরই চাকরিটি ছেড়ে দিতে হয়েছে তাকে। তবে বর্তমানে চাকরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।
জেরিন জানান, চাকরি খুঁজতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার মুখে পড়ছেন তিনি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, সার্কুলার থাকলেও ইন্টারভিউর জন্য ডাকছে না নিয়োগ দাতারা।
‘চাকরির সার্কুলার আছে। বিডি-জবস বা অন্যান্য যেখানে বিভিন্ন সেকশনে চাকরির সার্কুলার আছে। অ্যাপ্লাইও করছি। কিন্তু সেই হিসেবে ডাক পড়ছে না।’
তিনি বলেন, অন্য আরেকটি সমস্যা হচ্ছে তার তিন বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি যে ধরণের চাকরি খুঁজছেন সে ধরণের চাকরি পাচ্ছেন না।
‘যেখানে চাকরির ডাক পড়ছে সেখানে আমার যে অভিজ্ঞতা সেই অনুযায়ী পদ, বেতন কিংবা পরিবেশ-কোনটিই ঠিক মিলছে না,’ বলেন শাকিলা জেরিন।
এদিকে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের উপর গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে চার মাস ধরে চাকরি খুঁজছেন শিপ্রা সরকার।
তিনি বলেন, চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে এখন আসলে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার্কুলার আসছে না। আর যে সার্কুলারগুলো আসছে সেগুলোতে অভিজ্ঞতা নেই এমন মানুষদের সুযোগ কম বলেও জানান তিনি।
‘রিকোয়্যারমেন্টস (নিয়োগকর্তাদের চাহিদা) এখন অনেক হাই হয়ে গেছে। ৩-৪ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা ছিল এমন মানুষদের প্রেফার (অগ্রাধিকার) করছে। নতুনদের জন্য সুযোগ কম।’
এ ধরণের অভিযোগগুলোর বিষয়ে অনেকটা একই রকম মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শুধু বাংলাদেশে নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই চাকরির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মানবসম্পদ কর্মকর্তাদের একটি অ্যাসোসিয়েশন, গ্রিন এইচআর প্রফেশনাল বাংলাদেশের সভাপতি রওশন আলী বুলবুল বলছেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে চাকরির অবস্থা খারাপ। প্রত্যেকটা কোম্পানির একই অবস্থা।’
‘প্রত্যেকটা কোম্পানি ৫০% কর্মী নিয়ে কাজ করছে। তাদের যে জনবল আছে সেটাই ভালভাবে ব্যবহার করতে পারছে না তারা। তো নতুন কাজের সুযোগ হলে আগে পুরনো কর্মীদের সেখানে কাজে লাগানো হবে। তারপর নতুন নিয়োগ। আর এ কারণেই চাকরির ডাকও কম হচ্ছে।’
তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময়েও চাকরি পেতে কী ধরণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে- সে বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে-
১. নিজের আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করুন :
কিভাবে কোথায় চাকরি খুঁজবেন সেটা অনেক সময়ই বেশ ঝামেলার মনে হতে পারে। বিশেষ করে আপনি যদি জব মার্কেট বা চাকরির বাজার থেকে বেশ কিছু সময় ধরে বাইরে থাকেন তাহলে সেটি আরো বেশি কঠিন মনে হতে পারে।
এক্ষেত্রে যে বিষয়টি কাজ করতে পারে সেটি হচ্ছে, প্রথমেই নিজের একটি আকর্ষণীয় অনলাইন প্রোফাইল তৈরি করুন। যাতে করে একদিকে আপনার জন্য যেমন চাকরির আবেদন করা সহজ হবে ঠিক তেমনি অন্যদিকে নিয়োগকর্তারাও আপনাকে সহজে খুঁজে পাবে।
এই প্রোফাইল তৈরি করার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তা হচ্ছে আপনার মূল দক্ষতার জায়গাগুলো হাইলাইট করতে হবে।
সিভি বা বায়োডাটা অথবা জীবন বৃত্তান্ত বানানোর সময় আপনার দক্ষতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিন। অভিজ্ঞতাগুলোকে এর পর স্থান দিন। যেমন, আপনি সিভিতে বলতে পারেন যে, কোন কোন প্রজেক্ট আপনি নির্দিষ্ট সময়সীমা এবং বাজেটের মধ্যে করতে পেরেছেন। আপনি আগের কোম্পানিকে কিভাবে কতগুলো নতুন ক্লায়েন্ট জোগাড় করে দিয়েছেন সেগুলো বর্ণনা করুন।
আবেদন করার আগে তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে আপনার সিভি ও আবেদনপত্রটি পড়তে দিন। কোনো ভুল থাকলে সেগুলো সংশোধন করুন।
প্রতিবার আলাদা কোম্পানি এবং পদের জন্য আলাদা আলাদা সিভি এবং আবেদনপত্র তৈরি করুন। এটি একটু সময় সাপেক্ষ হলেও এতে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে ডাক না পেলে ফোন করে খোঁজ নিতে পারেন। এতে ওই কোম্পানির জন্য আপনাকে ইগনোর করা বা পাত্তা না দেয়াটা একটু কঠিন হয়ে পড়বে।
২. কোথায় চাকরি খুঁজবেন?
বিভিন্ন জব সাইটে চাকরির বিজ্ঞাপন দেয়া থাকে। আবার অনেক কোম্পানি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিজেদের ওয়েবসাইট বা পোর্টালে দিয়ে থাকে। সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
কোনো নির্দিষ্ট একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে চাইলে খবর নিন যে সেখানে নিয়োগ হচ্ছে কিনা।
আপনি যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট পদে চাকরি করতে চান তাহলে নিজে উদ্যোগী হন, ওই পদে যারা কাজ করছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চেষ্টা করুন যে তারা কিভাবে সেটি পেয়েছেন।
প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলো এক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে। যেমন ধরুন লিংকডইন, ফেসবুক গ্রুপ, শিল্প কিংবা কমিউনিটি সংস্থা ইত্যাদি। এসব জায়গায় বিভিন্ন চাকরির খোঁজ যেমন থাকে ঠিক তেমনি কিভাবে আপনি সেটি অর্জন করবেন তার নির্দেশনাও থাকে।
৩. অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরুন :
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এক্ষেত্রে অন্যদের থেকে নিজেকে কিভাবে আলাদা প্রমাণ করবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পরিচয় অনেকটাই কাজে আসতে পারে।
আপনার বন্ধু, পরিবারের সদস্যরা কিংবা অন্যান্য পরিচিতরা-যেই হোক না কেন তাদেরও পরিচিত আরো অনেক মানুষ থাকে। যাদের মধ্যে কেউ হয়তো নিয়োগকর্তা হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদেরকে আপনার চাকরির খোঁজ সম্পর্কে বলে রাখতে পারেন।
কারণ পরিচিত থাকলেই যে চাকরি হবে সেটা হয়তো না। কিন্তু অনেক নিয়োগকর্তাই রয়েছেন যারা পরিচিতদের মধ্য থেকে নিয়োগ দিতে বেশি আগ্রহী। এছাড়া পরিচিত থাকলে আপনি হয়তো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসার আগে থেকেই জানতে পারবেন যে কোথায় চাকরির সুযোগ রয়েছে আর কোথায় নেই।
৪. যে পদের জন্য আবেদন করছেন সে বিষয়ে জানুন :
চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, নিয়োগকর্তা এবং দায়িত্ব সম্পর্কে জানা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইমপ্লয়ার ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, যে প্রতিষ্ঠান বা পদের জন্য আবেদন করছেন সে বিষয়ে অবশ্যই জানতে হবে।
‘ওই পদে চাকরি না করেও বাইরে থেকে যতটা জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব সেটা করতে হবে। এখন ইন্টারনেটের যুগ এছাড়া বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকেও ধারণা নেয়া যায়।’
সেই সাথে ওই পদে চাকরিটি হলে তার দায়িত্ব কী হবে, তিনি কিভাবে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে লাভবান করতে পারবেন সেটিও জানতে হবে।
‘যেহেতু আগের তুলনায় এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেশি, তাই অন্যদের থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হলে অনেক বেশি দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে।’
৫. কোনো কাজকে ছোট মনে না করে শুরু করতে হবে :
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চাকরি লাভের ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হচ্ছে ধৈর্য্য ধরতে হবে। সব কিছু একদিনে বা চাইলেই হয়ে যাবে না সেটি মাথায় রাখতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের চাকরি সংক্রান্ত একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট বিডি-জবসের প্রধান নির্বাহী একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, বসে না থেকে যেকোনো কাজে ঢুকে পড়তে হবে। এতে করে নতুন অভিজ্ঞতা
বাড়বে।
‘আমি কত টাকা বেতন পাচ্ছি বা আমার পদটা কি সেটা দিয়ে কোনো কাজের মূল্যায়ন হয় না। আমি কতটা ভ্যালু অ্যাড করছি বা নতুন কাজের কতটুকু শিখতে পারছি সেটাই বড় ব্যাপার।’ বলেন তিনি।
৬. অভ্যস্ততা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে :
বিডি-জবসের প্রধান নির্বাহী একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, যারা করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছেন তাদের জন্য চাকরি পাওয়ার পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তাদেরকে আসলে কমফোর্ট জোন বা অভ্যস্ততার জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি একটি চাকরি করতে করতে হয়তো তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি হয়তো একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতনও পেতেন।
‘তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাকে মাথায় রাখতে হবে যে, তার কাজের সেক্টর একই নাও থাকতে পারে, তার বেতনের জায়গাটাতে হয়তো কম্প্রোমাইজ করতে হতে পারে।’
নতুন করে চাকরির আবেদন করতে গেলে এসব বিষয় মাথায় রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
এখন তার চাকরিতে যোগ দেয়াটাই জরুরি। পরে হয়তো তার আগের জায়গাটা চলে আসবে। কিন্তু ছয় মাস বা এক বছর বসে থাকলে সেটি পরবর্তীতে চাকরি পেতে আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন মাশরুর।
‘সিভি-তে যদি থাকে যে সে অনেক দিন বসে ছিল তাহলে সেটাকে ভালভাবে দেখা হয়না,’ বলেন তিনি।
৭. মাল্টি-টাস্কিং হতে হবে :
এইচআর প্রফেশনাল বাংলাদেশের সভাপতি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন-এর উপ-পরিচালক রওশন আলী বুলবুল বলেন, বর্তমান চাকরির বাজারে একজন চাকরি-প্রার্থীকে অন্য প্রার্থীদের থেকে এগিয়ে থাকতে হলে তাকে অবশ্যই মাল্টি-টাস্কিং হতে হবে।
আগে যেমন যে পদের জন্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে শুধু সেই পদের দায়িত্ব এবং যোগ্যতা থাকলেই তাকে নিয়োগ দেয়া হতো। কিন্তু করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে তা বদলে গেছে। এখন সংশ্লিষ্ট পদের যোগ্যতা ছাড়াও আইটি বা প্রযুক্তি সম্পর্কিত দক্ষতা থাকাটা খুব জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘করোনার পর অনেকেই বাসায় বসে অফিস করছে। আগে টেকনিক্যাল নলেজ (জ্ঞান) না থাকলেও হতো। কিন্তু এখন সেটা বাধ্যতামূলক। আইটি-সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।’
এ বিষয়ে বিডি-জবসের প্রধান নির্বাহী মাশরুর বলেন, যারা মার্কেটিংয়ে কাজ করেন তারা হয়তো আগে স্বশরীরে গিয়ে উপস্থিত হয়ে মিটিং বা ক্লায়েন্টদের সাথে দেখা করতেন। কিন্তু এখন আর সেরকমটা নেই। এখন হয়তো ডিজিটালি তাকে সব কিছুতে যোগ দিতে হচ্ছে।
‘তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশি ব্যবহার করতে হবে। গুগল বা সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার জানতে হবে। তার পণ্যগুলো যাতে সার্চ করতে গেলে সবার আগে আসে সে বিষয়টা কিভাবে করতে হয় তা জানতে হবে।’
৮. নিজে নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন :
যাদের চাকরি চলে গেছে তাদের নতুন চাকরি পেতে সমস্যাই হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নতুন দক্ষতা বাড়ানোর সাথে সাথে নিজে নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। নতুন কোনো প্রতিষ্ঠান বা সেক্টরে কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন-এর উপ-পরিচালক রওশন আলী বুলবুল বলেন, ‘করোনার পর বর্তমানে অনলাইনে কাজের সুযোগ বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। স্বপ্ন, আগোরা, মিনাবাজার, ফুডপাণ্ডার মতো প্রতিষ্ঠানে লোক লাগছে। তো নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে এ ধরণের অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে কাজের মানসিকতা থাকতে হবে।’
সেই সাথে এই সেক্টরে নিজে নতুন কিছু করারও চিন্তা করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply